দুসেত্ দরাম

ভালবাসি তোমায় (ফেব্রুয়ারী ২০১৪)

মামুন ম. আজিজ
  • ১৮
  • ৪৫
এক.
১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসের কোন এক সকাল।
যমুনার তীরবর্তী কর্মচঞ্চল আগ্রা শহরে এক অন্য রকম মিশ্র প্রাণচঞ্চলতা বিরাজ করছে। এ এক অদ্ভুত চঞ্চলতা, মনের গভীরে সবার উচাটন অথচ মুখে সবার ভীষণ বিষণ্ণ ভাব। মাস ছয়েক আগে ১৬৩১ সালের ১৭ই জুন যেদিন স¤্রাটের সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী ভরতপুরে চৌদ্দতম সন্তান প্রসবের সময় মারা গিয়েছিলেন তখন সে খবরে পুরো শহরে প্রতিটি মানুষের মুখে বিষন্নতার ছাপ ছিলো। তবে সেদিন ছিল না এই মিশ্র উচাটন। আজ একটু ব্যতিক্রম। ব্যতিক্রম আগ্রার সুবশিাল কেল্লার দোতলায় জানালার পিলার ধরে দাঁড়িয়ে থাকা চল্লিশ বছর বয়সের সুপুরুষ লোকটির চোখের জলের গভীরতায়ও। লোকটি আর কেউ নয়, সম্রাট শাহজাহান। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন দূরে ঐ যমুনার দক্ষিণ তীরে। রাজা জয় সিংয়ের নিকট হতে অনেক খানি জমি কেনা হয়েছে যমুনার তীরে। সেখানেই কাজ চলছে। প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য অশ্রু ফেলতে ফেলতে দৃষ্টি শক্তি কমে গেছে, সেই স্ত্রীর জন্য নতুন কবরের ব্যবস্থা হয়েছে, কবরের চারপাশে লাল আর শ্বেত পাথরের সমন্বয়ে গাঁথুনি গাঁথা হয়েছে। ভরতপুরের জয়নাবাদি বাগান থেকে লাশ চলে আসলে নতুন করে দাফন করা হবে, তারপর কবরের উপর চারপাশের গাঁথুনির উপর ভিত্তি করে সাদা শুভ্র শ্বেত পাথওে মুড়ে গড়ে উঠবে মহান এক স্মৃতিসৌধ। প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি ভালবাসার এই যতসামান্য নির্দশন সৃষ্টির স্বপ্নে মোটা অশ্রুর রেখা নেমে আসা গালের দাঁড়িগুলো একটু আনন্দে ফুলে ওঠে সম্রাটের।

...ক্ষানিক বাদেই আগ্রায় প্রবেশ করবে সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের লাশ বহনকারী পুরো দল। রোজকার মত নদীর তীরে ব্যবসায়ী নৌকাগুলো ভীড়ছে, লোক নামছে উঠছে, মাল উঠছে নামছে। লোকজন পশার সাজিয়ে বসছে বাজারে। অথচ সবার মাঝে সম্রাজ্ঞীর ফিরে আসার উৎকণ্ঠাও কাজ করছে ।

অনেকক্ষণ ধরেই সম্রাট তাকিয়ে আছেন যমুনা নদীর জলের মিষ্টি প্রবাহের দিকে। ওপর পাওে লাগানো হয়েছে গাছের সারি। আর ঠিক উল্টো পাশেই নির্মাণাধীন সৌধ, আজ অবশ্য কাজ বন্ধ। এক পাশে লাল পাথরের বড় বড় চাই জমা করে রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে মার্বেল পাথরও কিছু এসে পৌঁছেছে। সেগুলো ছাউনির ভেতর সুরক্ষিত, এখান থেকে দেখা যাচ্ছে না। কবরটা সম্পূর্ন প্রস্তুত, কেল্লা থেকে সেটা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও স¤্রাট লোক পাঠিয়ে পুনঃ নিশ্চিত হয়েছেন। একদল সৈন্য কড়া পাহাড়া দিয়ে রেখেছে সমাধিস্থল। ঠিক সেই সময় খবর এলো সম্রাজ্ঞীর লাশ এসে পৌঁছেছে। চোখের কোণ বেয়ে মোটা রেখায় জল দ্রুত নেমে আসার ধারাটি তিনি হাত দিয়েই মুছলেন। তারপর হাতের ইশারায় দূতকে কিছু বললেন।


দুই.
আগ্রা ফোর্টের বিশাল দরজার ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে হাতি ঘোড়া সহ বিশাল মানব বহরের শেষ লোকটিও প্রবেশ করল, কেবল প্রবেশ করলো না এক যুবক। ইতিমধ্যে সে লাশ বহনকারী বহরের একমাত্র পরিচিত লোকটির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছে। সালাম জানিয়ে বহর থেকে সরে পথে নেমেছে। যুবকের মাথায় নঁকশা করা টুপী। চাপ দাঁড়ির দৈর্ঘ্য খুবই সামান্য। চেহারায় উজ্জ্বলতা খুব বেশি আছে বলা যাবে না আবার আছেও। মোটামুটি সে ফর্সা। শরীর বেশ বলিষ্ঠ। পারসিয়ান কিংবা আফগান হিসেবে তাকে একবারে মেনেও নেয়া যায় না আবার ভারতীয় বলেও চালানো যায়। সে নিজেও জানে না তার পিতৃ পরিচয়। সম্ভবত সে মিশ্র। হিন্দু না মুসলমান তাও সে জানে না। বড় হয়েছে এক যাযাবর হিন্দু সর্দারের কাছে হিন্দু হিসেবেই। কোন এক বিশেষ কারণে তাদের যাযাবর দলটি একটি বিচ্ছিন্ন গ্রুপে পরিণত হয়। হয়ে ওঠে রাজস্থানের মরুপথের দস্যু। ও পথে অনেক ব্যবসায়ী দল যাতায়াত করে। সে সব অনেক কথা। তবে এই মুহূর্তে যুবকটির পরিচয় সে একজন মুসলমান পাথর মিস্ত্রী। নাম মোহাম্মদ আলী। ভরতপুরে প্রায় বছরখানেক বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাাণে সে পাথর ভাঙা ও সাইজ করার কাজ করেছে। ভরতপুরে সম্রাজ্ঞীর লাশ নিয়ে আসতে যাওয়া বহরের একজন মধ্যপদস্থ রাজ কর্মচারীর সাথে তার পরিচয় হয়। রাজকর্মচারীর কাছে সে তাজমহল নির্মানের বিষয় শোনার পর থেকেই সেখানে কাজ করা ইচ্ছা প্রসন করে। কর্মচারীটিরও আলীকে পছন্দ হয়েছে। সে একটি পত্র লিখে দিয়ে বলে পত্রখানা নিয়ে তাজমহল নির্মাণের অন্যতম স্থপতি ওস্তাদ আহমেদ লাহরীর অন্যতম প্রধান কারিগর আফাদির সাথে দেখা করতে। আফাদি তার ভগ্নীপতি হয় সম্পর্কে। আফাদি চাইলে লাহরীর সাথে কথা বলে কাজে লাগিয়ে দিতে পারবে।

কর্মচারীর কাছ থেকে গেটের বাইরে বিদায় নিয়েই সে ছুটে যায় তাজমহলের নির্মাণ স্থলে। চারপাশে সেখানে কড়া প্রহরার ব্যবস্থা। একটু পরে লাশ আসবে, স¤্রাট আসবেন, নতুন করে দাফনের ব্যবস্থা হবে। আলী বুঝতে পারে, আজ আর আফাদি কিংবা ওস্তাদ লাহরীর দর্শন বোধহয় পাওয়া গেলো না। এদিক সেদিক ঘুরে দেখে সময় কাটাতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে কিছুটা দূরে দক্ষিণে চলে আসে। তখনও সন্ধ্যা হয়নি। তাজ গঞ্চ বাজারে নতুন নতুন দোকান নির্মাণ হচ্ছে। আগ্রার এদিকে নতুন গড়ে ওঠা তাজ গঞ্জে ব্যবসা তাজমহল নির্মানের আগেই প্রসার হতে শুরু করেছে। আলী মনে আনন্দ পায়, বুঝতে পারে এখানে কাজের অভাব হবে না বহুদিন।

লোকজনের চলাফেরা বেশ কম। সম্রাট এসেছেন, মৃত সম্রাজ্ঞীর লাশের নতুন দাফন হবে। উৎসুক লোকজন সকলে সেদিকেই চলে গেছে। মোহাম্মদ আলীর খুব পানি পিপাসা লেগেছে। একেতো সেই দীর্ঘ ক’দিনের যাত্রাপথ,বহরের সাথে শেষ খাবার খেয়েছিল সেই সকালে। দুপুরে তেমন কিছু খাওয়ার সুযোগ হয় নি।এখন উপলব্ধি হচ্ছে। পা আর চলছে না। নির্বোধের মত অজানা গন্তব্যে কেনো হাঁটছে এই নিয়ে এখন কিঞ্চিৎ ভাবতে সে বাধ্য হলো। হাতের ভাঁজ করা কাপড়ের চিঠিটায় একবার চোখ বুলায় তারপর বসে পরে সামনের বাড়িটির দরজার চৌকাঠে।নিজের উপর উপহাস হয়, যখন দস্যুবৃত্তি করত, মরু পথে ক্রোশের পর ক্রোশ পথ হেঁটেছে,আর এখন সাধু হয়ে হয়েছে দূর্বল। খুব পানির তেষ্টা পাচ্ছে। একবার ভাবলো দরজায় টোকা দেয়, তারপর সংকোচ হয়। গত এক বছরে এই মুসলিম বেশে তা এসব শিক্ষা বেশ হয়েছে। গৃহের নারীদের পর্দার বিষয় সব কিছুর উপরে।একজন বাইরের লোক এসে কোন নারীর দিকে চোখ মেলে তাকাবে আর সে খবর যদি গৃহ কর্তার কানে যায়, তার কি রক্ষা আছে।আচ্ছা দরজায় কড়া নাড়লে মহিলাই যে খুলবে তা কেনো ভাবছে সে, নিজের উপর নিজের উপহাস হলো।এবং সাথে সাথে দরজায় সত্যি সত্যি কড়া নাড়ল। পরপর দু’বার।

সত্যি দরজা খুলে সামনে এসে দাঁড়াল এক নারীই। চেহারা দেখা যাচ্ছে না, এক হাতে মুখের নীল রঙের নেকাব টেনে আড়াল করে রেখেছে চেহারা। হাতদুটো ভীষণ ফর্সা তার।হাতের টান টান সজীবতা, শিরায় রক্তের উজ্জ্বল নীল প্রবাহ বলে দিচ্ছে এ নারীর বয়স পনের ষোলর বেশী যেন মোটেও নয়। শুদ্ধ ফারসী ভাষায় সে নারী জিজ্ঞেস করল,‘কে আপনি,কি চাই?’

মোহাম্মদ আলী মুসলমান হয়েছে ঠিকই, ফারসী এখনও অতটা আয়ত্তে আসেনি। তবে হিন্দীর সাথে উর্দুটা পারে ভালোই। উর্দূতে জানালো ‘আমি ফার্সী ভাষা জানি না। আমি একজন পথচারী। ভরতপুর থেকে সম্রাজ্ঞীর লাশ বহনকারী দলের সাথে এসেছিলাম...’

মেয়েটা বুঝল,বলল এবার উর্দুতে,‘তো এখানে কেন,সম্রাট শুনেছি এতক্ষণে চলে এসেছেন সৌধ নির্মানের স্থানে।

উর্দূ তে যেন আরও মধুর সুর তার কণ্ঠে। আলী মুগ্ধ না হয়ে পারছে না। অনেকক্ষণ নীরব থেকে জানালো তার মুখ্য উদ্দেশ্য। মেয়েটা মনে হলো কিঞ্চিৎ হাসল। বলল, ‘চিঠিটা দেখান তো।’

মেয়েটা চিঠিটা হাতে নিতে গেলো ওমনি সেটা হাত ফসকে নিচে পড়ে গেলো। সেটা উঠাতে গিয়েই নেকাব টলে গেলো। সেই অপরূপ রূপ মুহূর্তে এক পাল উড়ে চলা হাঁস হয়ে ঢুকে গেলো মোহাম্মদ আলীর মনের আকাশে। সে চেহারা আর ভোলার নয় কিছুতেই। মেয়েটা বলল, ‘এতে কি লেখা আছে আপনি পড়েছেন?’

‘না, আমিতো ফারসী পড়তে পারি না।’ আসলে সে যে কোন হরফই পড়তে পারে না সেটা বললো না। তবে মেয়েটা যে পড়তে পারে সেটা বুঝল। বুঝল এটা নিশ্চয় কোন বিশিষ্ট ব্যক্তির বাড়ি। না হলে অন্দরের নারীরা পড়তে শিখলো কেমন করে। তার উপর যে এক ঝলক চেহারা সে দেখলো তাতে বুঝে গেছে এ নারী এ এলাকার না। নিশ্চিৎ এর বাবা মা পার্সীয়ান। ইরান থেকেই এসে থাকবে। কোন এলাকার লোকের চেহারা কেমন তা তার চেয়ে আর ভাল কে বুঝবে। মেয়েটা তাকে ভেতরে আসতে বলল, একটা ঘরে বসতে বলল । এবার আলী পুরো বাড়িতে চোখ বুলালো, বেশ একটা গোছানো ভাব। কেতাদুরস্থ বলা যেতে পারে।

মেয়েটা প্রায় মিনিট দশেক পরে ফিরে এল। সাথে আরেকটা হিন্দুস্থানী মেয়ে, চেহারা উন্মোচিত তার। দাসী মনে হয়। হাতে একটা প্লেটে কিছু খাদ্য দ্রব্য, আর পানির পাত্র।

সেগুলো নামিয়ে রেখে মেয়েটি খেয়ে নিয়ে অপেক্ষা করতে বলে উল্টো পথে হাঁটা দিতে যাচ্ছিল, তখনই বলল, ‘জনাব আলী আপনি যে খুবই ভাগ্যবান তা কি জানেন?

আলীর উত্তরের অপেক্ষা না করেই মেয়েটা আবার বলল, ‘আপনি যে গৃহে কড়া নেড়েছেন এটাই প্রধান কারিগর জনাব আফাদির গৃহ আর আমি তার কন্যা। যে লোকটি আপনাকে পত্র লিখে দিয়েছেন উনি আমার ছোট আম্মাজানের ভ্রাতা মানে আমার মামা হন সম্পর্কে। আপনি বসুন, আপনার জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, আপনি আজ এখানে থাকবেন। আব্বাজানের ফিরতে রাত হবে অনেক। সকালে আমি দেখা করিয়ে দেবো।’

বলেই সে চলে যাবার জন্য পা বাড়িয়ে দিয়েছে, কিছুটা তখন হতবিম্ব মোহাম্মদ আলী। তথাপি তার মুখ দিয়ে কেনো যেন বের হয়ে এলো, সে কিন্তু স্বর্তস্ফুর্ত নয়, সে অজান্তেই... ‘আসলেই আমি ভাগ্যবান, আপনার দৃষ্টিনন্দন মুখশ্রী দেখার সৌভাগ্য হয়ে গেলো প্রথম সাক্ষাতেই, কানিজ কি তার নামটা আমাকে বলে আরও ভাগ্যবান হবার প্রমাণ দিয়ে যাবেন?...’

তারপর সেই হলো দ্বিতীয় দর্শন। মেয়েটা নেকাবটা একটু বাহিরের দিকে টেনে ধরে মুখটা ঘুরিয়ে মিষ্টি হাসিটা ছুড়ে দিয়ে আলীর দিকে দ্রুত প্রস্থান নিলো।

প্রেম বোধহয় এভাবেই শুরু হয়। দু’জনের অজান্তে দু’জনের ইচ্ছে অনিচ্ছার আড়ালেই।

তিন.
একদা যাযাবার, মরু পথের দস্যু, ধর্ম, অধর্ম সব পেরিয়ে আজ সে তুখোড় পাথর কারিগর। বলিষ্ট হাত তার। শক্তিশালী পেশী। চোস্ত চেহারার আড়ালে কঠিন মিশ্রন। ওতো জীবনের উত্থান পতনের স্মৃতিচিহ্ণ। তবুও সে সবই হয়তো মনে ধরেছিল এক ইরাণী বংশোদ্ভুত নারীর। কথা বলা কিংবা দেখার সুযোগ খুবই কম, তবুও চোখের একটা গোপন ইশারা চলছিলোই।

ইতিমধ্যে আফাদি তার নতুন স্ত্রীর ভ্রাতার চিঠি পড়ে এবং মোহাম্মদ আলীর বলিষ্ট চেহারা সুরত দেখে তাকে নিয়ে পরদিনই লাহারীর সাথে দেখা করিয়ে দেয়। আফাদি কিংবা লাহারীকে কাজ দেখিয়ে সন্তুষ্ট করতে মোহাম্মদ আলীর বিন্দু মাত্র দেরী হয়নি। আর সে কারণেই তার অতীত পরিচয় নিয়ে ঘাটাঘাটির প্রয়োজনীয়তাও কারও সামনে তেমন একটা আসেনি। সে এখন রোজ পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে। ও কাজ সে আগেই রপ্ত করে নিয়েছিল ভরতপুর থাকতে। আফাদি তাকে তার বাড়ীর কাছেই এক সরাইখানায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে স্বল্প খরচে। মাঝে মাঝেই আফাদি তাকে বাসায় নিয়ে আসে। একসাথে পাশে বসিয়ে খাওয়ায়। তাজ গঞ্জের নতুন বাজার এলাকায় একসাথে বাজার করতে যায়, আফাদিও হাতের থলে কেড়ে নিয়ে বয়ে আনে মোহাম্মদ আলী।

সেদিন বিকেলে সূর্যটা খুব লাল হয়ে উঠেছিল। ছুটির দিন ছিলো আলীর। পাথর কাটার কাজ ছিল না। আফাদির সাথে দেখা করতে এসেছিল সে। আফাদি বাড়ীতে ছিল না। কিন্তু প্রয়োজন গুরুতর। কিছু লাল পাথর এসেছে খুব খরাপ মানের। পারচিন কারি মানে তাতে নঁকশা করতে পারছিল না পারচিন কারী কারিগর। সে ব্যাপারে কথা বলতেই এসেছিল। বাড়ির ছাদে একা একা বসে ছিল আলী। আফাদি সন্ধ্যার পরে আসবে বলে গেছে কৃত দাসী। লাল আকাশ কঠিণ মিস্ত্রীকে হঠাৎ ভাবাবেগে আপ্লুত করে। না করে কি উপায়, ঐ দূরেই ওপাশের এক ঘরে উঁকি দিচ্ছে সেই মুখ। নেকাব তো নেই নেই, চুলের লম্বা অংশ ঝুলে আসে সামনে। দুহাত সেখানে বেণী করেই চলেছে। প্রথমে থতমত খেলেও আলী বারবার না তাকিয়ে থাকতে পারল না। তারপর হঠাৎ নারী নেই...শুণ্যতা তখন জানালায় একা একা মজা নিচ্ছে। হঠাৎ পায়ের শব্দ । খুব কাছেই ছাদের অন্য কিনারে দাঁড়িয়ে আছে নারী। লাল আলো ঢলে পড়েছে আকাশে, আঁধারের দুষ্টুমি শুরু হলো প্রায়। এই নিয়ে আজ পঞ্চমবারের মত নামটা জিজ্ঞেস করল আলী তাকে। অনেকটা সময় এরপর দু’জনে চুপ। আঁধার চলে এসেছে পুরোপুরি। মূল দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এখুনি নেমে দ্রুত হারিয়ে যাবে রক্তিম আকাশের মত নিরালায় মেয়েটা।

‘দয়া করে নামটা বলুন, না হলে বিয়ের প্রস্তাব দেবো কি বলে?’

‘আঞ্জুমান’ বলেই হাওয়ায় মিশে গেলো সে।


চার.
মোহাম্মদ আলীর নিজের বলে কেউ ছিল না কোথাও। পালক পিতাকে কবেই ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে রাজস্থানী এক রাজা। সেই রাজ কর্মচারী যার বদৌলতেই মূলত এই সুখের জীবন তার তাকে ধরেই প্রস্তাব পাঠালো আফাদির কাছে। সে যেন আফাদি আর আঞ্জুমানের মা’র মনেরই কথা। কেনো অমোত হবে!।

এতদিন যা ভাবে নি এইবার তাই মনে খচখচ্ করছিলো আলীর। তার তো সব মিথ্যে, মিথ্যে পরিচয়, মিথ্যে অতীত,মিথ্যে ধর্ম। খতনাটাও পর্যণÍ করা নাই। হঠাৎ ভয় হয়, যদি আঞ্জুমান জিজ্ঞেস করে...করবেই তো,বলে ওঠে মন। সে তাকে সব জানাবে। প্রেম কোন পাথরের কারিগরের পেশা নয়,এতো স্বর্গীয়,এতো পবিত্র...মিথ্যে এখানে জঞ্জাল বই কোন আলোকিত বস্তু নয়। সে জানাবে।সব জানাবে। কিন্তু কিভাবে বুঝতে পারে না। অবশেষে একখানা কাগজে লিখে আঞ্জুমানের কাছে পাঠাবে ভাবে। কিন্তু সেখানেও তো বিপত্তি, কে লিখবে? কাকে দিয়ে লেখাবে। মাথায় বুদ্ধি আসে। পারচিন কারীর কাজ করে তার এক খুব ঘনিষ্ট মিত্র আবুল কাশেম মিয়া, সে লিখতে পড়তে পারে। তার কাছেই যায় সে। লিখিয়ে আনে, ‘আঞ্জুমান, আমার কিছু অজানা অতীত আছে, তোমার জানা প্রয়োজন, যদি শোনানোর সুযোগ দিতে।’

এর বেশি কিছু লিখে নেয় না। মিত্রকেও এই মিথ্যে জীবনের স্বাক্ষী বানানো ঠিক না। এতে উভয়েরই ক্ষতি। পোড় খাওয়া যুবক সে। সে বোঝে খুবই ভালো। ধরা পড়লে স¤্রাটের দরবারে নির্ঘাত মৃত্যুদন্ডাদেশ।

আঞ্জুমানের নিকট হতে একদিন পরেই উত্তর আসে, ‘সব শুনব, তবে সে হবে আমাদের নিজেদের একান্ত আপন রাতে।’

এরপর আর সুযোগ হয়নি। আর দেখাও হয়নি।

১৬৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে এক শুক্রবার বাদ জুম্মা মোহাম্মদ আলী আর আঞ্জুমানের শুভ নিকাহ্ হয়ে গেলো।

...নিজের সঞ্চয় আর শ্বশুরের দেয়া কিছূ অর্থে তাজ গঞ্জে মোহাম্মদ আলী একটা ছোট গৃহ নিয়েছে। দু’জনের বিয়ের বয়সও প্রায় বছর পাঁচেক হয়ে গেছে। প্রতি দিন যায় তাদের প্রেম একটু একটু করে যেন নতুন মাত্রা পায়। এই দীর্ঘ পাঁচ বছরে কখনও তারা একে অন্যকে ছাড়া থাকে নি। ইতিমধ্যে তাদের এক ছেলে আর এক মেয়ের জন্ম হয়েছে। মেয়েটি বড়, নাম রেখেছে স¤্রাজ্ঞীর নামে-মমতাজ। অবশ্য এ নামে তারা প্রকাশ্যে ডাকে না। কে কোন দিকে স¤্রাটের কানে দেবে। আর যদি স¤্রাট অসন্তুষ্ট হন, তবেতো হয়েছে। প্রকাশ্যে তার মেয়েকে ডাকে আজমিরা বলে। ছেলেটি ছোট, এখনও নাম রাখা হয়নি।

বিয়ের প্রথম রাতে খৎনা নিয়ে প্রশ্ন করার আগেই সব বলে দেবে যত কষ্ট করেই হোক এই ছিল আলীর পণ। সে তা করেছিলো। অজানা শৈশব তার। কুড়িয়ে পেয়েছিল পালক পিতা এক বাজারে। স্ত্রীকে সে সত্যি বলেছিল তার দস্যু জীবনের কথা। মরু পথের দস্যু ছিল তার পিতার ছোট যাযাবর দল। লুটই ছিল মুখ্য। মানুষ মরল না বাঁচল সে নিয়ে তারা ভাবত না। সবাই ধরা পড়েছিল হঠাৎ একদিন রাজার সৈন্যদের কাছে।একমাত্র সেদিনের দস্যু বালা তথা আজকের মোহাম্মদ আলী পালিয়ে বেঁচেছিল । আঞ্জুমানের চোখের কোনে পানির ফোঁটা জমছিল, তারপর সে ফোঁটা নিজেই আলীর হাত টেনে মুছে নিয়ে বলেছিল,‘আমি শুধু তোমাকেই চেয়েছিলাম।’

আলীও বলে উঠল সাথে সাথে ফারসীতে,‘তোমাকে পেয়ে আমি গর্বিত, আমি ধন্য’। এতটুকু ফারসী সে শিখে নিয়েছিল,আরও শিখেছিল সেই ভালবাসার বাণীটুকু...‘দুসেত দরাম’, কিন্তু তা আর মুখ ফুটে বের হয়নি, সে কথা বলার যে নয়,সে যেন কেবল প্রকাশের তাই মুহূর্তে আঞ্জুমান হারিয়ে গেলো আলীর বলিষ্ঠ বাহুর ভেতরে।

বিগত পাঁচ বছরে আলী বেশ পড়তে শিখেছে উর্দু এবং ফার্সী আর বলতে শিখেছে জবরদোস্ত। এ কীতির্তের পুরোটাই বর্তায় আঞ্জুমানের উপরেই।

পাঁচ.
১৬৪৬ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট মাস।আঞ্জুমান পঞ্চম বারের মত সন্তান সম্ভবা। এর আগে চার সন্তানের মধ্যে তিনজন বেঁচে আছে। সবচেয়ে বড় জন মমতাজ এর মমতাজ নামকরণ সম্রাটের কানে ঠিকই পৌঁচেছিল। সম্রাট বেজার তো হনইনি বরং স্বয়ং সেই মেয়ের জন্য একটি মতির হার উপহার পাঠিয়েছেন। ইতিমধ্যে মোহাম্মদ আলীর কর্ম প্রশংসার খবরও সম্রাটের গোচরীভূত হয়েছিল। প্রিয়তমা সম্রাজ্ঞীর নামে তার প্রজারা কন্যার নামকরণ করছে এ খবরে সম্রাট আপ্লুত না হয়ে পারেননি।

মমতাজ মহলের জন্য তৈরী সমাধি সৌধ এখন পুরোটাই প্রায় দাঁড়িয়ে গেছে। সময় তো কম পেরোই নি। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর ধরে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেছে। হাজার হাতি পাথর টেনেছে। এ যে এত বিশাল এত সুন্দর একটা স্থাপত্য সে কখনওই কল্পনা করেনি মোহাম্মদ আলী। ইরানী চারবাক ধাঁচে চারটি ভাগে পুরো এলাকার স্থাপত্য নির্মাণ হয়েছে। সম্রাট শাহজানের স্ত্রীর প্রতি এই অপার প্রেমে সে বিমোহিত, সে বিস্মিত। এখন অবশ্য বেশ কিছু নঁকশা আর সমাপনী কাজ বাকী রয়েছে। মূল স্থাপনাটা এখন স্পষ্ট বোঝা যায়, দূর থেকে মধ্য মিনার আর চারপাশের উঁচু চারটি মিনার স্পষ্ট দেখা যায়। রোজ একবার হলেও আলী হা করে মিনিট দশেক তাকিয়ে গিলতে থাকে ঐ অপূর্ব সৌন্দর্য। তারপর গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে সে নিজেও এই মহান কীর্তির এক ক্ষূদ্র কারিগর। কি মহান প্রেমের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন স¤্রাট। তার আর আঞ্জুমানের প্রেম ও প্রেমের কাছে নস্যি। সে কথা ভেবেই আবার মনে মনে ভাবে কোথায় স¤্রাট আর কোথায় মিথ্যে অতীতের এক সত্যি প্রেমিক।

১৬৪৬ সালের সেপ্টেম্বরেই ঘটল মোহাম্মদ আলীল জীবনের এই অভাবনীয় সুখের পতন। আঞ্জুমান মারা গেলো সন্তান প্রসব করতে গিয়ে। কাছেই এক কবরস্থানে তার কবর দেয়া হয়েছে পিতা আফাদির কবরের পাশে। বছর দুয়েক আগে তাজমহল নির্মাণ কাজের সময় এক দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন আফাদি। আঞ্জুমানের মৃত্যুর পর আর কিছুই ভালো লাগেনা তার। সেই কঠিন কর্মঠ আলী কেমন যেন চুপষে থাকে সারাদিন। কেবলই মনে হয় আঞ্জুমান আর মিষ্টি হাসি দিয়ে আড়চোখে তাকাবে না। কষ্ট হয় ভেবে শেষবারের মত হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় রাখা হয়নি। সে শুনেছে রাজা বাদশাহরা স্ত্রীদের কাছে টেনে মিষ্টি করে বলে ভালবাসার কথা।তার কখনও বলা হয়নি। গভীরে উচ্চারিত হয়েছে মুখ ফোটেনি। আরেকবার যদি সুযোগ পেতো,একটিবার তবে নির্ঘাত বলে উঠত ‘দুসেত্ দরাম আঞ্জুমান’।

সে সম্রাট না হতে পারে, তাজমহল না বানাতে পারে, অতি তুচ্ছ, সামান্য কিছুও কি তার করার নেই। সে কেবলই ভাবে। তারপর হঠাৎ এক ভোরে মাথায় ঢুকে যায়। সকাল সকাল সেদিন কাজের স্থানে চলে যায়। তার একটা শ্বেত পাথর দরকার। কত পাথর সে সুন্দর করে, নিঁখুত করে কেটে দিয়েছে, তার সেই সব কাটা পাথরে পারচিন কারীর নিপুন শিল্প বুনেছে পারচিন কারী কৌশলীরা,সেসব শোভা পাচ্ছে তাজমহলের গায়। তার একটা সুন্দর সাইজের শ্বেত পাথর দরকার। তার কাছে নেই। সব এখন পারচিন কারী শিল্পীদের কাছে। তারা খোদাই করে নকশা এঁকে দামী দামী সব আকিক, নীলা, রুবি পাথর বসাচ্ছে তাতে। সেখান থেকে তার একটা বড় সবর শ্বেত পাথর চাই ই চাই, সাথে পারচীন কারী শিল্পিদের কাছে থাকা ভাঙা চোরা সব দামী রঙিন পাথরের টুকরোও। সে বন্ধু আবুল কাশেম নামের পারচিন কারী শিল্পীর সহায়তায় পারচীণ কারীর কারখানায় চলে যায় কাজ দেখতে, তারপর সুযোগ বুঝে দামী পাথরের ভাঙা টুকরো বেশ অনেকগুলো জোগাড় করে আড়াল করে পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। পরের দিন সুযোগ বুঝে নিয়ে নেয় বেশ প্রমাণ সাইজের একটা শ্বেত পাথরও।দীর্ঘদিন দেখতে দেখতে তার পারচিন কারীর কাজ অনেকটাই মুখস্থ। কেবল দরকার বিশেষ ধরণের আঠা যা খোদাইয়ের মধ্যে পাথর ধরে রাখবে আজীবন। তাও খানিকটা সে চুরি করে নিয়ে আসে।

আলীর সেই পারচিন কারী শিল্পী বন্ধু আবুল কাশে মিয়ার দৃষ্টিগোচর হয়না বিষয়। সে বুঝতে পারে এবং লাহরীকে জানায়। তবে লাহরী বিচক্ষণ লোক। না বুঝে শেষ সিদ্ধান্ত নেবার লোক না সে। সে আর আবুল কাশেম মিলে প্রায় একমাস নজর রাখে আলীর উপর। যখন বুঝতে পারে তার উদ্দেশ্যে,তারাও বিষয়টি চেপে যায়।

...প্রায় দুমাস ধরে তিলে তিলে রাতের বেলা খোদাই আলী ঠিকই লিখে ফেলে শ্বেত পাথরের উপর ফারসী ভাষায় ‘দুসেত্ দরাম’ (বাংলায়-‘তোমাকে ভালবাসি’)। বসিয়ে দেয় বিশেষ আঠা দিয়ে রঙ বেরঙের দামী সব পাথরের বাতিল টুকরো গুলো। তারপর রাতে সেই এপিটাফ বসিয়ে দিয়ে আসে আঞ্জুমানের কবরের উপর।

(বিঃদ্রঃ - লেখাটি নিছক একটি ইতিহাস নির্ভর গল্প মাত্র, সত্য ইতিহাস নয়)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া ইতিহাস নির্ভর গল্প !! এমন আরও কত ইতিহাস , কত গল্প জড়িয়ে আছে তাজমহলের সাথে কে জানে !!
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
গল্পটি পরে মনে হল , রকম কাহিনী নিয়ে একটি নাটক হতে পারে , অবশ্যই ভালোবাসা দিবসের জন্য ।
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোজাম্মেল কবির সত্যিই হয়তো এমন অনেক গল্প ইতিহাসের আড়ালে লুকিয়ে আছে... আপনার কারিগরি চমৎকার...
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মিলন বনিক মামুন ভাই...ইতিহাস এভাবেই সৃষ্টি হয়....এবং এভাবেই অমরত্ব লাভ করে...মানুষের মনে ঠাই করে নেই.....খুব ভালো লাগলো...প্রিয়তে রাখলাম....
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
তানি হক মামুন ভাইয়ের গল্পটি ... চিরদিন হৃদয়ে বেঁচে থাকবে । ধন্যবাদ মামুন ভাই ।
ভালো লাগেনি ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
তানি হক কিছু বলার মত শব্দ পাচ্ছিনা মামুন ভাই ... অসাধারণের চেয়েও অসাধারণ এই গল্পটি পড়ে পাথর হৃদয় ও মোমের মত গলে গলে যাবে ! জয় হোক ভালোবাসার শুধু এই চাওয়া । আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা । আলী এবং আঞ্জুমানেরা বেঁচে থাকবে পৃথিবীতে চির কাল ।
ভালো লাগেনি ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোঃ আক্তারুজ্জামান মামুন ভাই, আপনার এই লেখাটাও আমার কাছে একটা অসাধারণ শিল্পকর্মই মনে হচ্ছে। বশীর ভাই খুব সুন্দর বলেছেন। উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটুক আপনার লেখনি শক্তির, এই কামনা।
ভালো লাগেনি ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
উন্নয়নের অনুঘোটক মিলছে না....মাটি চাপা পড়ে যেতে পারে। ধন্যবাদ। গল্পটা ভালো লাগায় খুবই আনন্দিত
ভালো লাগেনি ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মিছবাহ উদ্দিন রাজন মোহাচ্ছন্ন হওয়ার মতো একটা লেখা ।
ভালো লাগেনি ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মিছবাহ উদ্দিন রাজন মোহাচ্ছন্ন হওয়ার মতো একটা লেখা ।
ভালো লাগেনি ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ওয়াহিদ মামুন লাভলু সে সম্রাট না হতে পারে, তাজমহল না বানাতে পারে, অতি তুচ্ছ, সামান্য কিছুও কি তার করার নেই। ভালবাসার অসাধারণ গল্প। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
বশির আহমেদ একজন লেখকের কল্পনা শক্তি যে কতটা সুদুর পসারী তার এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত আপনার এই হল্প । চারশত বছর াাগের একটি কাহিনীকে উপজিব্য করে এত সুন্দর চিত্রকল্প একেছেন যা পড়ে অবাক না হয়ে পারছি না । অনেক অনেক শুভ কামনা রইল আপনার জন্য ।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৭৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪